হাইব্রিড টপলেডি পেঁপে বীজ।

 হাইব্রিড টপলেডি পেঁপে বীজ।




টপ লেডি জাতটি তাইওয়ানের উচ্চ ফলনশীল বামন প্রজাতির পেঁপের জাত যা বাংলাদেরশের আবহওয়াতে চাষ উপযোগী। বাংলাদেশের অনেক স্থানে এর চাষ হচ্ছে। বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলে ফলন খুবই ভালো হচ্ছে। বান্দরবানের মাটি ও আবহাওয়া টপলেডি পেঁপে চাষের জন্য উপযোগী।


বীজ সংগ্রহ

ঢাকার ফুলবাড়িয়ার বীজ বিক্রয়ের মার্কেট সিদ্দিক বাজারে টপ লেডি পেঁপের বীজ পাওয়া যায়। অনেক কোম্পানী নিন্মমানের বীজ প্যাকেট জাত করে টপ লেডি বলে বিক্রি করে প্রতারনা করছে। তাই বীজ কেনার সময় ভালভাবে যাচাই বাছাই করে ক্রয় করতে হবে।  চায়না ও তাইওয়ানের টপ লেডি বীজ পাওয়া যায় তবে তাইওয়ানের বীজের ফলাফল অনেক ভালো। তাই তাইওয়ানের বীজ ক্রয় করা উত্তম।


দাম

তাইওয়ানের টপ লেডি ১ গ্রাম বীজের প্রতি প্যাকেট ৫০০-৫৫০ টাকায় কিনতে পাওয়া যায়।



বীজের হার

প্রতি গ্রামে বীজের সংখ্যা ৬০-৭০টি। হেক্টর প্রতি ৭০-১০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন। সে হিসেবে ৩০০০-৩২০০ চারা দিয়ে ১ হেক্টর জমিতে পেঁপে চারা লাগানো যায়। বীজের অংকুরোদগমনের হার ৭৫-৯৫% ।


চারা তৈরি

বীজ থেকে বংশ বিস্তার করা যায়। বীজের প্যাকেট কেটে ২ ঘন্টা রোদে শুকানোর পর ঠান্ডা জায়গায় রেখে ঠান্ডা করে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পানিতে ভেজানোর পর পলেথিন ব্যাগে চারা তৈরি করতে হবে। পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করলে রোপনের পর চারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ৫X৬ সেমি আকারের ব্যাগে সম পরিমাণ বেলে দোআঁশ মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ ভর্তি করে, ব্যাগের তলায় ২-৩ টি ছিদ্র করতে হবে। তারপর এতে সদ্য সংগৃহীত বীজ হলে একটি এবং পুরাতন বীজ হলে ২টি বীজ বপন করতে হবে। ১টি ব্যাগে এক এর অধিক চারা রাখা উচিত নয়।


রোপনের সময়

আশ্বিন (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) এবং পৌষ (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) মাস পেঁপের বীজ বপনের উত্তম সময়। বপনের ৪০-৫০ দিন পর চারা রোপণের উপযোগী।


চারা রোপণ

১.৫ থেকে ২ মাস বয়সের চারা রোপণ করা যায়। সারি থেকে সারির দূরত্ব ২ মিটার। ২ মিটার দূরে দূরে ৬০X৬০X৬০ সেমি আকারে গর্ত করে চারা রোপণের ১৫ দিন পূর্বে গর্তের মাটিতে সার মিশাতে হবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য ২ সারির মাঝখানে ৫০ সেমি নালা রাখতে হবে।


টপ লেডি হাইব্রিড পেঁপে জাতের বৈশিষ্ট্য

এটি তাইওয়ানের উচ্চ ফলনশীল বামন প্রজাতির পেঁপে।

টপ লেডি জাতের প্রত্যেক টি গাছে পেঁপে ধরে ।

টপ লেডি জাতের পেঁপে গাছ সর্বচ্চো ১০ ফিট হয়।

গাছের উচ্চতা ৬০-৮০ সেমি হলে ফল ধরা শুরু হয়।

প্রতিটি গাছে ৫০-১২০ পর্যন্ত ফল ধরে।

৫-৬ মাসের মধ্য ফুল আসে এবং প্রথম ফল পাওয়া যায় ৭-৯ মাসের মধ্য।

এই জাতের পেঁপে গুলি বেশ বড়।

ফলের রং লাল-সবুজ।

এক একটি ফলের ওজন ১.৫ থেকে ২ কেজি।

ফলের মাংস বেশ পুরু, গাঢ় লাল রঙের, স্বাদেও বেশ মিষ্টি ও সুগন্ধিযুক্ত।

কাঁচা ও পাকা উভয়ভাবে বাজারজাত করা যায়।

এই জাতের পেঁপে পাকা অবস্থায় সহজে নষ্ট হয় না। ফলে দূর দুরান্তে সহজেই বাজারজাত করা যায়।

এই জাতের পেঁপে রিং স্পট ভাইরাস রোগ সহনশীল।

এই জাতের পেঁপের জীবনকাল ২ বছরের অধিক।




সার ব্যবস্থাপনা

চারা লাগানোর পর নতুন পাতা আসলে ইউরিয়া ও এমপি সার ৫০ গ্রাম করে প্রতি ১ মাস অন্তর প্রয়োগ করতে হবে। গাছে ফুল আসলে এ মাত্রা দ্বিগুণ হবে। শেষ ফল সংগ্রহের আগেও সার দিতে হবে।


পেঁপে গাছের পরিচর্যা

বাগান সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। গাছের গোড়া থেকে আগাছা তুলে ফেলে দিতে হবে। গাছের গোড়ার মাটি কোদাল দিয়ে হালকা করে দিতে হবে। গাছে অতিরিক্ত ফল ধরলে কিছু ফল ছিড়ে নিয়ে হালকা করে দিলে, বাকি ফল গুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। পেঁপে গাছে বিভিন্ন হরমোন প্রয়োগ করে বেশ সুফল পাওয়া যায়।


ফল সংগ্রহ

পেঁপে গাছে সাধারণত ৫-৬ মাসের মধ্য ফুল আসে এবং প্রথম ফল পাওয়া যায় ৭-৯ মাসের মধ্যে।

 পুষ্ট হওয়ার সময় কোন কোন ফলে হলুদ রং ধারন করবে। পুষ্ট ফলে কিছু দিয়ে খোচা দিলে ফল থেকে পানির মতো তরল আঠা বের হবে। অপুষ্ট ফল থেকে দুধের মতো ঘন আঠা বের হবে।



ফলন

টপ লেডি জাতের প্রতিটি পেঁপে গাছ থেকে প্রায় ৫০-১২০ টি ফল পাওয়া যায়।


(সংগৃহীত)

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url